স্টাফ রিপোর্টারঃ-সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় নিয়মিত ৩৮ জন গ্রাম পুলিশ ও দফাদার তাদের সরকারি বেতনের দাবীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদির হোসেনের নিকট অভিযোগ দায়ের করেন।
রবিবার বেলা ১২ টার দিকে তারা এ অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে গত ২৯ মাস যাবত সরকারের বরাদ্দকৃত বেতন পাচ্ছেন না তারা। এমতাবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে তাদের পরিবারের সদস্যরা । দীর্ঘ দিন যাবত বেতন ভাতা না পাওয়ায় বহুবার দারস্থ হয়েছেন সংশ্লিষ্টদের নিকট।কিন্তু কোন প্রকার কাজে কাজ হয়নি। এবিষয়ে ইউপি সচিবরা জানান সরকারি বেতনের বিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভাল বলতে পারবেন।
একই ভাবে চেয়ারম্যানরা দায়সারা ভাবে বলেন ইউএনও অফিস এবিষয়টি দেখেন। নির্বাহী কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায় পর্যাপ্ত পরিমান বরাদ্দ না থাকায় তাদের বেতন দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এঅবস্থায় গ্রাম পুলিশ ও দফাদার বেতন না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন যাপন করছেন তারা ।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী সলিল দাস জানায় বরাদ্দ নেই। গ্রাম পুলিশরা লিখিত অভিযোগ করেছে। আশা করা যাচ্ছে কয়েক দিনের মধ্যে তাদের ভাতা দেওয়া যাবে।
উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গ্রাম পুলিশের বেতনের অর্ধেক পায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আর বাকী অর্ধেক পায় সরকারী ভাবে।
সরকারি বরাদ্দে বেতন ভাতা তারা পাননি। এজন্যই তারা অভিযোগ করেছেন।
উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ৩৮ জন গ্রাম পুলিশ ও দফাদার রয়েছে। আটগাঁও ইউনিয়নে ৭জন পুরুষ ১ জন নারী , হবিবপুুরে পুরুষ ৬ জন নারী ৩ জন ১ জন দফাদার, বাহাড়া ইউনিয়নে ২ জন নারী আর পুরুষ ৭ জনসহ দফাদার ১ জন, শাল্লা ইউনিয়নে ২জন নারী ৭ জন পুুুুরুষ ১ জন দফাদার নিয়োজিত রয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে হবিবপুর ইউনিয়নের দফাদার সুদীপ দাস জানান,আমরা ২৯ মাস ধরে সরকারি বেতন ভাতা পাচ্ছিনা। তিনি বলেন আমার পরিবারে ৩ ছেলে ও স্ত্রী সহ সংসারের ভরন পোষন করতে পারছিনা,ধারদেনা করে চলছি দীর্ঘদিন ধরে। একই ভাবে শাল্লা ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ প্রাণনাথ দাস জানান,অসুস্থ্য শরীর নিয়ে প্রতিদিন বেতনের খোঁজে উপজেলা সদরে আসি, চিকিৎসার টাকাও হাতে নেই, এমনকি আসা যাওয়ার ভাড়াও নেই আমার। তাই পায়ে হেটে ৫ কিলোমিটার জায়গা রৌয়া গ্রাম থেকে সদরে আসি। বাহাড়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ হরিকান্ত দাস জানান,আমার ভাড়ার টাকা নেই, হাওলাত করে এসেছি,সংসার নিয়ে চলতে খুব কষ্ট হচ্ছে আমার।
হবিবপুর ইউনিয়নের সচিব সমীর চন্দ্র সরকার জানান, আমাদের বেতনই ঠিকমতো পাচ্ছিনা। প্রায় এক বছর ধরে আটকে রয়েছে। আর গ্রাম পুলিশদের বেতনের বিষয়টির দায়ভার উপজেলা পরিষদের। তবে উপজেলা পরিষদের একাউন্টে পর্যাপ্ত পরিমান টাকা না থাকায় গ্রাম পুলিশরা বেতন পাচ্ছেন না বলে তিনি জানান।
হবিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল জানান, গ্রাম পুলিশদের বেতন বিল ইউএনও অফিস ঢিল করেন,তারা ভালো বলতে পারবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদির হোসেন অসুস্থজনিত কারনে হাসপাতালে থাকায় উনার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।।এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন অসহায় গ্রাম পুলিশরা।
কমেন্ট করুন